This video is about The Limitation Act- 1908 If any people see this video he/she can understand “ Section 1 to 7 of Limitation Act ” very easily.
From our Blog
Showing posts with label আইনি পরামর্শ. Show all posts
Showing posts with label আইনি পরামর্শ. Show all posts
03 February 2019
The Limitation Act - 1908 Part - 2
This video is about The Limitation Act- 1908 If any people see this video he/she can understand “ Section 1 to 7 of Limitation Act ” very easily.
The Limitation Act - 1908 Part - 3
This video is about The Limitation Act- 1908 If any people see this video he/she can understand “ Section 8 to 11 of Limitation Act ” very easily.
29 January 2019
সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন - ১৮৭৭ পর্ব - ৫
এই ভিডিও তে আপনি চুক্তি অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট কার্যসম্পাদন সম্পর্কে জানতে পারবেন।
27 January 2019
যৌতুক নিরোধ আইন - ২০১৮ (বিস্তারিত)
এই ভিডিওতে যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮ এর উপর বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আশা করি আপনারা এই ভিডিওটা দেখলে যৌতুক নিরোধ আইন, ২০১৮ এর উপর একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা পাবেন। যৌতুক আইনে শাস্তি কি? যৌতুক আইনে মিথ্যা মামলা করার শাস্তি?
26 January 2019
21 January 2019
The Penal Code 1860 (Bangla) Lecture – 4
এই ভিডিও তে আপনি জানতে পারবেন ফৌজদারী অপরাধের ক্ষেত্রে পরার্থ দায় ।
20 January 2019
দণ্ডবিধির গুরুত্বপূর্ণ ধারা পর্ব-২
এই ভিডিওতে আমরা দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর যে সকল গুরুত্বপূর্ণ ধারা রয়েছে সেগুলো দেখানর চেষ্টা করেছি। এই পর্বে ধারা ২৩০ থেকে ৫১১ ধারা পর্যন্ত আলোচনা করবো।
The Penal Code 1860 (Bangla) Lecture – 3 | দণ্ডবিধির আঞ্চলিক প্রয়োগ
এই ভিডিও তে আপনি জানতে পারবেন দণ্ডবিধির
আঞ্চলিক প্রয়োগ ।
আঞ্চলিক প্রয়োগ ।
18 January 2019
The Penal Code 1860 (Bangla) Lecture – 2 | প্রাথমিক আলোচনা
এই ভিডিও তে আপনি জানতে পারবেন দণ্ডবিধি – ১৮৬০ সম্পর্কে প্রাথমিক বিষয় সমুহ ।
Bangla Law School Youtube Channel
10 January 2019
বাংলাদেশে প্রথম আইন শিক্ষা বিষয়ক ইউটিউব চ্যানেল “বাংলা ল’ স্কুল”
ডিজিটাল
বাংলাদেশের রূপকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃতে এগিয়ে যাচ্ছে
বর্তমান বাংলাদেশ। আইনি শিক্ষা ব্যবস্থায় ডিজিটাল করণের উদ্দেশ্যে সম্পূর্ণ
ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাংলাদেশে এই প্রথম চালু হয়েছে বাংলা ল’ স্কুল। বর্তমানে ১৪০০
জন আইনের শিক্ষার্থী তাদের প্রস্তুতি গ্রহণ করছে এই চ্যানেলের মাধ্যমে। বাংলা ল’ স্কুল ডিজিটাল আইনি
শিক্ষায় এক অগ্রণী ভূমিকা পালন করে এগিয়ে যাচ্ছে তার আপন গতিতে। শত বাঁধা ডিঙিয়ে
নতুন এক ডিজিটাল আইনি শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়নে ভূমিকা পালন করা বাংলা ল’ স্কুলের মূল
লক্ষ্য।
আইনের উপর
ভিডিও লেকচার গুলো ইউটিউব চ্যানেলে দেয়ার
প্রধান কারণ হল, ইউটিউবে ভিডিও গুলো আইনের ভিত্তিতে
প্লেলিস্ট করে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা যায় যেটা ফেসবুক বা অন্য মাধ্যমে করা যায়
না।
বাংলা ল’ স্কুল এর কার্যক্রম
এবং লক্ষ্য:
প্রথম ধাপে -
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আইনজীবী নিবন্ধন প্রস্তুতি সংক্রান্ত আইনের উপর ভিডিও
লেকচার দেওয়া হবে। একই সাথে এমসিকিউ
প্রশ্ন আমাদের Community Tab এ পোস্ট করা
হবে।
দ্বিতীয় ধাপে-
বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য ভিডিও লেকচার দেওয়া হবে।
তৃতীয় ধাপে -
আইনের অন্যান্য বিষয়ের উপর ভিডিও দেওয়া হবে।
যেখানে থাকবে আইনের ব্যাবহারিক বিষয় সমূহ।
বাংলাদেশ বার
কাউন্সিল আইনজীবী নিবন্ধন প্রস্তুতির উপর
মোট ২০০০ MCQ দেওয়া হবে যা শিক্ষার্থীদের
প্রস্তুতিতে সহায়ক হবে।
এই ভিডিও
লেকচার গুলো দেখার জন্য কোন অর্থ খরচ করতে হবে না।
অদূর ভবিষ্যতে
বাংলা ল’ স্কুল হবে ডিজিটাল আইন
শিক্ষায় এক অন্যতম মাধ্যম।
লেখকঃ পরিচালক বাংলা ল’ স্কুল
16 December 2018
01 December 2018
দলিল জাল কি-না তা পরীক্ষা করার নিয়ম
১. সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিলের প্রকৃতি অনুযায়ী চারটি রেজিস্ট্রার বা ভলিউমে লেখা হয়ে থাকে। কোনো দলিল নিয়ে সন্দেহ হলে রেজিস্ট্রি অফিসে সংরক্ষণ করা দলিলের সাল মিলিয়ে দেখতে হবে। এ জন্য নির্দিষ্টভাবে দরখাস্ত করতে হবে। এতে দলিলটির যাবতীয় তথ্য দিতে হবে।
২. এক জমির একাধিক মালিকের নামে করা থাকলে ধরে নিতে হবে দলিলটি জাল হতে পারে। এ ক্ষেত্রে সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে মূল মালিক কে, তা নির্ণয় করতে হবে।
৩. অনেক সময় স্বাক্ষর জালিয়াতি করে দলিলদাতা বা গ্রহীতার সাজা হয়। এ ক্ষেত্রে স্বাক্ষর বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে স্বাক্ষরের সত্যতা যাচাই করিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া ভূমি অফিস থেকে বিভিন্ন সিল পরীক্ষা করেও জালিয়াতি নির্ণয় করা যায়। খেয়াল রাখতে হবে, অনেক আগের দলিলে আগের চিহ্নিত কিছু সিল ব্যবহারই থাকে। আগের দলিল কিন্তু সিল যদি নতুন হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে, দলিলটি জাল হতে পারে। একই সঙ্গে তারিখটিও ভালোভাবে যাচাই করতে হবে। দলিল রেজিস্ট্রির তারিখ কোনো সরকারি বন্ধের দিন থাকলে সন্দেহের অবকাশ থাকবে। অনেক সময় অর্পিত সম্পত্তি বা মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি জীবিত দেখিয়ে জাল করা হয়।
৪. সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস থেকে জমির মিউটেশন বা নামজারি সম্পর্কে খোঁজ নিতে হবে। নামজারিতে ধারাবাহিকতা ঠিক আছে কি না, সেটা সুচারুভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যদি দেখা যায়, সিএস জরিপের সঙ্গে বিক্রেতার খতিয়ানের কোনো গরমিল আছে, তাহলে বুঝতে হবে, কোনো জটিলতা আছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, জরিপ খতিয়ানে জমির পরিমাণ পরবর্তী সময়ে যতবার বিক্রি হয়েছে, তার সঙ্গে জমির পরিমাণ মিল আছে কি না, তা যাচাই করে দেখা। দাগ নম্বর, ঠিকানা এসব ঠিক আছে কি না, এসব যাচাই করতে হবে।
৫. জমির স্বত্ব কী বা মালিকানা যাচাই করতে হবে। বিক্রেতার কাছ থেকে সব দলিল, বিশেষ করে ভায়া দলিল চেয়ে নিতে হবে। সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে জানতে হবে সব দলিলের ক্রমিক নম্বর, দলিল নম্বর ঠিক আছে কি না।
৬. সম্প্রতি কোনো আমমোক্তারনামা দলিল থাকলে তাতে উভয় পক্ষের ছবি ব্যবহার হয়েছে কি না যাচাই করতে হবে।
৭. কোনো দান করা জমি হলে দলিলে সম্পাদনের তারিখ দেখে কবে জমিতে গ্রহীতা দখলে গেছে তা যাচাই করতে হবে। দলিলটি রেজিস্ট্রি করা কি না এবং দলিলদাতার সঙ্গে গ্রহীতার সম্পর্ক কী, তা যাচাই করতে হবে।
৮. সম্প্রতি সম্পন্ন হওয়া কোনো বিক্রীত দলিলের দলিল লেখকের নাম ঠিকানা জেনে সরেজমিন কথা বলে নেওয়া দরকার।
৯. দলিল সম্পাদনের সময় ব্যবহূত স্ট্যাম্পের পেছনে কোন ভেন্ডার থেকে স্ট্যাম্প কেনা হয়েছে এবং কার নামে কেনা হয়েছে খেয়াল রাখুন। প্রতিটি স্ট্যাম্পের পেছনে একটি ক্রমিক নম্বর উল্লেখ থাকে। এ নম্বরটি ঠিক আছে কি না, প্রয়োজনে স্ট্যাম্প বিক্রেতার সঙ্গে দেখা করে যাচাই করে নিন।
তালাক, একে-অপরের বিরুদ্ধে মামলা ও তার ফলাফল
আইনের ভাষায় তালাক হচ্ছে ‘বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করা অর্থাৎ স্বামী স্ত্রীর পারস্পরিক সম্পর্ক যদি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, একত্রে বসবাস করা উভয়ের পক্ষেই বা যে কোন এক পক্ষের সম্ভব হয় না, সেক্ষেত্রে তারা নির্দিষ্ট উপায়ে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে পারে।’
সুমির (ছদ্ম নাম) দাম্পত্য জীবনে এমনটিই ঘটেছিল। অবশেষে তিনি তার স্বামীকে তালাক প্রদান করেন। কাবিননামার ১৮ নম্বর ঘরে স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা দেওয়া ছিল। সেই অধিকারের ভিত্তিতে সুমী স্থানীয় কাজি অফিস থেকে তালাকের যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ করে তালাকনামা স্বামীর বরাবর পাঠিয়ে দেন। কিন্তু স্বামীর বসবাসরত স্থানীয় চেয়ারম্যান অফিসে পাঠানো হয়নি কোনো তালাকের কপি। সুমীর এ বিষয়টি জানা ছিল না। স্থানীয় কাজি অফিস থেকেও পাঠানো হয়নি কোনো কপি।
কিন্তু আইন অনুযায়ী স্বামী বা স্ত্রী যে কেউ একে অপরকে তালাক দিতে চাইলে তাকে যে কোন পদ্ধতির তালাক ঘোষণার পর যথাশীঘ্রই সম্ভব স্থানীয় ইউপি/পৌর/সিটি মেয়রকে লিখিতভাবে তালাকের নোটিশ দিতে হবে এবং তালাক গ্রহীতাকে উক্ত নোটিশের নকল প্রদান করতে হবে। চেয়ারম্যান/মেয়র নোটিশ প্রাপ্তির তারিখ হতে নব্বই দিন অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো তালাক বলবৎ হবে না। কারন নোটিশ প্রাপ্তির ত্রিশ দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান/মেয়র সংশ্লিষ্ট পক্ষদ্বয়ের মধ্যে আপোষ বা সমঝোতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সালিশী পরিষদ গঠন করবে এবং উক্ত সালিশী পরিষদ এ জাতীয় সমঝোতার (পুনর্মিলনের) জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থাই অবলম্বন করবে।
সুমী তালাকনামায় যেদিন স্বাক্ষর করেন, সেদিন থেকে পার হয়ে যায় দুই মাস। এর মানে ৯০ দিন ইদ্দতকাল পালন হতে হলে আর মাত্র এক মাস অপেক্ষা করতে হবে। সুমীর স্বামী আইনি দুর্বলতার সুযোগে এরই মধ্যে সুমীকে তার কাছে ফিরে পেতে পারিবারিক আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলাটির নাম দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধার মামলা। এই মূল মামলাটি করার এক সপ্তাহ পর সুমীর স্বামী একই আদালতে একটি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন এই মর্মে যে, সুমী যাতে অন্য কোথাও বিয়ে না করতে পারেন। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সুমী ও তার বাবাকে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আপত্তি দাখিলের জন্য ১০ দিনের সময় দিয়ে তাদের ঠিকানায় সমন পাঠিয়ে দেয়।
সমন হাতে পেয়ে সুমীর চেহারায় দুশ্চিন্তা আর অস্থিরতার ছাপ স্পষ্ট হয়ে উঠে। তার বাবাও হয়ে পড়ে বিধ্বস্ত। কারন এক মাসে দুটি সমন তারা পান। একটি দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধার মামলার লিখিত জবাব দাখিলের জন্য, আরেকটি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আপত্তি দাখিলের জন্য।
দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধার মামলায় বিবাদী করা হয়েছে তিনজনকে। প্রথম বিবাদী সুমীর বাবা, দ্বিতীয় বিবাদী তার মা এবং তৃতীয় বিবাদী সুমী নিজে। আরজিতে সুমীর স্বামীর অভিযোগ, তাঁর স্ত্রীকে জোর করে তালাক দিতে বাধ্য করেছেন তার বাবা। এখন তিনি তাকে নিয়ে ঘর করতে চান। কিন্তু সুমীর ভাষায়, তার স্বামী দুশ্চরিত্রের লোক। নানাভাবে অত্যাচার করত। বাইরে মদ আর নারী নিয়ে ব্যস্ত থাকত। জুয়া খেলত। স্ত্রী আর তার মেয়ের প্রতি কোনো খেয়াল রাখত না। এমন পাষণ্ড আর নির্দয় লোকের সঙ্গে ঘর করার চেয়ে একা থাকা ভালো-এই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বাধ্য হয়ে তাকে তাকে তালাক দিই।
সুমী যাতে অন্য কোথাও বিয়ে না করতে পারেন এই অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদনে সুমীর স্বামীর অভিযোগ ‘বিবাদীগণ পরস্পর যোগসাজশে অন্যায় ও বেআইনিভাবে ৩ নম্বর বিবাদীকে অর্থাৎ তার স্ত্রীকে ইদ্দতকালীন সময়ের মধ্যেই অন্যত্র পুনঃবিবাহ দেওয়ার জোর অপতৎপরতায় লিপ্ত হইয়া জনৈক চাকুরীজীবী পাত্র নির্বাচন করিয়া ফেলিয়াছেন এবং যেকোন সময় তার স্ত্রীকে উক্ত পাত্রের সহিত বেআইনীভাবে পুনঃবিবাহ সংঘটন করিতে পারেন।’
কিন্তু আইনের প্রশ্ন হচ্ছে, পারিবারিক আদালতে দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধার মামলায় অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন চলে কি না। মকবুল মাজেদ বনাম সুফিয়া খাতুন মামলায় (৪০ ডিএলআর ৩০৫, এইচসিডি) মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের সিদ্ধান্ত এরকম যে, ১৯৮৫ সালে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জের সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা হয়। পারিবারিক আদালতের অধ্যাদেশে করা সর্বপ্রথম মামলাটিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি উত্থাপিত হয়। এতে স্বামী তাঁর স্ত্রীর দ্বিতীয় বিয়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রার্থনা করে। আদালত নিষেধাজ্ঞার আবেদন অগ্রাহ্য করেন। পরে জেলা জজ আদালতে আপিল করা হলে আপিল নামঞ্জুর হয়। পরে হাইকোর্ট বিভাগে রিভিশন করা হয়। হাইকোর্ট বিভাগ তার রায়ে বলেন, ‘পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশে ২০ ধারা অনুযায়ী দেওয়ানি কার্যবিধির ধারা প্রয়োগ যোগ্য নয়।
অবশেষে সুমীর স্বামীর দায়ের করা মামলাটির শুনানি হলো। আদালত আদেশ দিলেন, ‘ইদ্দতকাল পর্যন্ত অর্থাৎ ৯০ দিন অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত স্ত্রী অন্যত্র বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হইতে পারিবে না এ মর্মে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা মঞ্জুর।’ সাধারণত আইন অনুযায়ী তালাকের নোটিশ প্রেরণের পর ইদ্দতকাল পর্যন্ত, অর্থাৎ ৯০ দিন অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকর হয় না। এ সময় অন্যত্র বিয়ে করার ক্ষেত্রে আইনে নিষেধ আছে। আদালত ইদ্দতকাল পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা দিয়ে এ আইনের কার্যকারিতা আরও পাকাপোক্ত করলেন।
এখানে প্রশ্ন উঠতে পারে তাহলে মূল মামলাটির অর্থাৎ দাম্পত্য অধিকার পুনরুদ্ধার মামলাটির কী হবে?’ সহজেই বলা যায়, মূল মামলার জবাব দিতে হবে। মামলায় লড়তে হবে। শুনানিতে সুমী আদালতে উপস্থিত হয়ে বললেন, কাবিননামার ১৮ নম্বর ঘরে তার তালাক প্রদানের ক্ষমতা দেওয়া আছে। তিনি স্বেচ্ছায় এবং স্বজ্ঞানে তার স্বামীকে তালাক দিয়েছেন। আর তিনি তার স্বামীর ঘর করতে চান না। বিজ্ঞ আদালত ওই দিনই মামলাটি খারিজ করে দিলেন। আইনত সুমীর মেয়েটি সাবালিকা হওয়া পর্যন্ত মায়ের হেফাজতেই থাকবে।
১৯৩৯ সালের মুসলিম বিবাহ বিচ্ছেদ আইনে অত্যন্ত— সুষ্পষ্টভাবে বলা হয়েছে কি কি কারণে একজন স্ত্রী আদালতে বিয়ে বিচ্ছেদের আবেদন করতে পারবে।
কারণগুলো হলোঃ
১. চার বছর পর্যন্ত স্বামী নিরুদ্দেশ থাকলে।
২. দুই বৎসর স্বামী স্ত্রীর খোরপোষ দিতে ব্যর্থ হলে।
৩. স্বামীর সাত বৎসর কিংবা তার চেয়েও বেশী কারাদ- হলে।
৪. স্বামী কোন যুক্তিসংগত কারণ ব্যতিত তিন বছর যাবৎ দাম্পত্য দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে।
৫. বিয়ের সময় পুরষত্বহীন থাকলে এবং তা মামলা দায়ের করা পর্যন্ত বজায় থাকলে।
৬. স্বামী দুই বৎসর ধরে পাগল থাকলে অথবা কুষ্ঠ ব্যাধিতে বা মারাত্মক যৌন ব্যধিতে আক্রান্ত থাকলে।
৭. বিবাহ অস্বীকার করলে। কোন মেয়ের বাবা বা অভিভাবক যদি ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগে মেয়ের বিয়ে দেন, তাহলে মেয়েটি ১৯ বছর হওয়ার আগে বিয়ে অস্বীকার করে বিয়ে ভেঙ্গে দিতে পারে, তবে যদি মেয়েটির স্বামীর সঙ্গে দাম্পত্য সর্ম্পক (সহবাস) স্থাপিত না হয়ে থাকে তখনি কোন বিয়ে অস্বীকার করে আদালতে বিচ্ছেদের ডিক্রি চাইতে পারে।
৮. স্বামী ১৯৬১ সনের মুসলিম পারিবারিক আইনের বিধান লংঘন করে একাধিক স্ত্রী গ্রহণ করলে।
৯. স্বামীর নিষ্ঠুরতার কারণে।
উপরে যে কোন এক বা একাধিক কারণে স্ত্রী আদালতে বিয়ে বিচ্ছেদের আবেদন করতে পারে। অভিযোগ প্রমাণের দায়িত্ব স্ত্রীর। প্রমাণিত হলে স্ত্রী বিচ্ছেদের পক্ষে ডিক্রি পেতে পারে, আদালত বিচ্ছেদের ডিক্রি দেবার পর সাত দিনের মধ্যে একটি সত্যায়িত কপি আদালতের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যানের কাছে পাঠাবে।
১৯৬১ সনের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ অনুযায়ী চেয়ারম্যান নোটিশকে তালাক সংক্রান্ত নোটিশ হিসেবে গণ্য করে আইনানুযায়ী পদক্ষেপ নিবে এবং চেয়ারম্যান যেদিন নোটিশ পাবে সে দিন থেকে ঠিক নব্বই দিন পর তালাক চূড়ান্তভাবে কার্যকর হবে।
স্বামীর আদালত স্বীকৃত নিষ্ঠুর ব্যবহার সমূহ
ক) অভ্যাসগতভাবে স্ত্রীকে আঘাত করলে বা নিষ্ঠুর আচরণ করলে, উক্ত আচরণ দৈহিক পীড়নের পর্যায়ে না পড়লেও, তার জীবন শোচনীয় করে তুলেছে এমন হলে।
খ) স্বামী খারাপ মেয়ের সাথে জীবনযাপন করলে।
গ) স্ত্রীকে অনৈতিক জীবনযাপনে বাধ্য করলে।
ঘ) স্ত্রীর সম্পত্তি নষ্ট করলে।
ঙ) স্ত্রীকে ধর্মপালনে বাধা দিলে।
চ) একাধিক স্ত্রী থাকলে সকলের সাথে সমান ব্যবহার না করলে।
ছ) এছাড়া অন্য যে কোন কারণে (যে সকল কারণে মুসলিম আইনে বিয়ের চুক্তি ভঙ্গ করা হয়)।
লেখকঃ সাপ্তাহিক ‘সময়ের দিগন্ত’ পত্রিকার প্রকাশক-সম্পাদক ও আইনজীবী জজ কোর্ট, কুষ্টিয়া।
লিখেছেনঃ অ্যাডভোকেট সিরাজ প্রামাণিক
ইজমেন্ট বা সুখাধিকার
ইজমেন্ট বা সুখাধিকার বলতে এমন এক সুবিধাভোগী স্বত্বের অধিকারকে বুঝায় যা দ্বারা কোনো জমির মালিক
বা দখলকার তা জমির সুবিধাজনক ভোগের জন্য অপর কোনো ব্যক্তির জমির উপর দিয়ে কিছু করতে বা করা অব্যাহত রাখতে, কোনো কিছু নিবৃত্ত করতে বা নিবৃত্ত অব্যাহত রাখতে পারে । (১৯৮২ সালের ইজমেন্ট রাইট এক্ট এর ৪ ধারা ) এ অধিকার অর্জন সম্পর্কে ১৯০৮
সালের তামাদি আইনের ২৬ ধারায় বলা হয়েছে যে, কোনো ব্যক্তি শান্তিপূর্ণভাবে এবং প্রকাশ্যভাবে কোনো
ব্যক্তির ভূ-সম্পত্তি বাঁধাহীন ভাবে ও নিরবচ্ছিন্ন ভাবে ২০
বত্সর কাল ধরে ভোগ দখল করে থাকলে তাতে তার পথ চলার অধিকার জনিত স্বত্ব অর্জিত হয় । দখলের ভিত্তিতে মালিকানা দাবী যদি কোনো ব্যক্তি কোনো কৃষি
বা অকৃষি জমি শান্তিপূর্ণ ভাবে এবং কোনো ব্যক্তির
বাঁধাহীন ভাবে একটানা ১২ বছর নিরবচ্ছিন্ন ভাবে তার নিজের ভোগ দখলে রাখে তাহলে ঐ ব্যক্তি ভোগ দখলকৃত জমিটিতে মালিকানা দাবী
করতে পারে এবং ঐ জমিটি হতে বেদখলের হাত থেকে মুক্ত থাকতে পারেন । তবে জমিটি যদি সরকারের
জমি হয়ে থাকে তাহলে বেদখলের হাত থেকে মুক্ত থাকার জন্য এবং মালিকানা দাবীর জন্য জমিটিতে ৬০ বত্সর নিরবচ্ছিন্ন ভাবে দখলে থাকতে হবে । (১৯০৮
সালের তামাদি আইনের ২৯ ধারা) জবর দখলের
মাধ্যমে মালিকানা দাবী চরের জমি, খাসজমি বা অর্পিত/ পরিত্যক্ত সম্পক্তি একসনা লীজ নিয়ে ভোগ দখলরত থাকা অবস্থায় অনেকেই জমির মালিকানা দাবী করে আদালতে স্বত্বের মামলা দায়ের করে থাকেন ৷ যদিও একসনা লীজ কোনো টেনান্সী অধিকার সৃষ্টি করে না । নির্দিষ্ট সময় পরবা ৩০ শে চৈত্র তারিখে একসনা লীজভুক্ত জমির দখল সয়ংক্রিয় ভাবে সরকারের উপর
বর্তায় ৷ লীজ গ্রহীতা মনে করেন যে সরকারী জমি বা খাস জমিতে ১২ বত্সর দখলে থাকলেই ঐ জমির মালিক হওয়া যায় । কিন্তু প্রকৃত সত্য কথা হলো সরকারী জমিতে ৬০ বত্সর যাবত্ ভোগ দখল তথা জবরদখল বা “Adverse Possession” এর মাধ্যমে মালিকানা দাবী করা যায় । (১৯৯০ সালের
ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়াল ৯৬ ও ৯৭ অনুচ্ছেদ)
১২ বত্সর বা তার অধিককাল পর্যন্ত দখলে থাকার পর অধিকার ১২ বত্সর সংক্রান্ত ধারণাটি মূলত ১৯৪৯ সনের অকৃষি প্রজাস্বত্ব আইন থেকে এসেছে । এ আইনের ৬(২) ধারায় বলা হয়েছে একজন অকৃষি প্রজা কোনো ব্যক্তি কোনো ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে ১২ বত্সর বা তার অধিককাল ধরে অবস্থান করলে সে উক্ত জমিতে নিম্নরূপ অধিকার ভোগ করতে পারবেন:
পাকা বাড়ী তৈরী করতে পারবে ;
যে কোনো ধর্মীয় উপাসনালয় তৈরী করতে পারবে;
পুকুর খুড়তে পারবে;
গাছ লাগিয়ে তার ফলফোগ করতে এবং উক্ত গাছ কর্তন/ বিক্রয় করতে পারবে ইত্যাদি ।
অধিকার জনসাধারণের চলাচলের জন্য রাস্তাঘাট ব্যবহারের অধিকার ।
টিউবওয়েল/কুপ/তারাপাম্প থেকে খাবার পানি ব্যবহারের অধিকার । পুকুর/জলাধারের পানি ব্যবহার
কিংবা সেখানে গোসলের অধিকার । আলো বাতাস চলাচলের জন্য গমনাগমনের পথ পাবার অধিকার ।
২০ বত্সর যাবত্ কোনো জমি ভোগ দখলের পর
তা স্বাধীন ভাবে ব্যবহারের অধিকার । সরকারী জমি হলে ৬০ বছরের বেশী সময় ধরে ব্যবহারের পর
স্বাধীন ভাবে ভোগ দখলের অধিকার । (১৮৮২ সালের
ইজমেন্ট রাইট এ্যাক্ট এর ৪ ধারা ) (১৯০৮ সালের
তামাদি আইনের ২৬ ধারা ) লঙ্ঘন সম্পত্তি অধিগ্রহণ
করা হবে মর্মে নোটিশ না পাওয়া ।অধিগ্রহণের বিরূদ্ধে আপত্তি দাখিলের সুযোগ না দেওয়া । আপত্তি দাখিলের জন্য আইনে বর্ণিত সময় না পাওয়া । সরকার কর্তৃক
সম্পত্তি অধিগ্রহণের চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে নোটিশ না পাওয়া। ক্ষতিপূরণের দাবী করার জন্য
আইনে নির্ধারিত সময় ও সুযোগ না পাওয়া । সম্পত্তিটি বর্গাদার বা বর্গাচাষীর হেফাজতে বা অধীনে থাকাকালীন অধিগ্রহণ হয়ে থাকলে বর্গাদারকে ক্ষতিপুরণ দাবী করার সুযোগ না দেওয়া । প্রকৃত বর্গাদারকে সম্পত্তি অধিগ্রহণের জন্য ক্ষতিপূরণ না দেওয়া । যে উদ্দেশ্যে সম্পত্তিটি অধিগ্রহণ করা হয়েছে সেই উদ্দেশ্যে সম্পত্তিটি ব্যবহার না করা ।
আইন অনুযায়ী পারিবারিক সহিংসতা রোধের উপায়
পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধে বাংলাদেশে ২০১০ সালে প্রনীত হয়েছে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন ২০১০যার ধারা ৩ অনুযায়ী পারিবারিক সহিংসতা বলতে “পারিবারিক সম্পর্ক রহিয়াছে এমন কোন ব্যক্তি কর্তৃক পরিবারের অপর কোন নারী বা শিশু সদস্যের ওপর শারীরিক নির্যাতন, মানসিক নির্যাতন, যৌন হয়রানি এবং আর্থিক ক্ষতি বুঝাইবে।”
আইনটির প্রধান বৈশিষ্ট্য এই আইনটিতে জাতিসংঘের নারীর প্রতি বৈষম্য বিলোপ ঘোষণা ১৯৯৩-এর ওপর ভিত্তি করে পারিবারিক সহিংসতার একটি স্পষ্ট সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে। সহিংসতামুক্ত ও স্বাধীনভাবে বসবাস করতে পারাটা যে নারীর অধিকার সে বিষয়টিও স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। সহিংসতার শিকার নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাসস্থানের আদেশসহ অন্তর্বর্তীকালীন সুরক্ষা আদেশ প্রদানের সুযোগ রয়েছে। আদালত দু’পক্ষের শুনানির পর প্রয়োজন মনে করলে সহিংসতার শিকার ব্যক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সুরক্ষার আদেশ প্রদান এবং প্রদত্ত সুরক্ষার আদেশ পুনর্বিবেচনা করতে পারবেন। এছাড়াও এই আইনটিতে ক্ষতিপূরণ, হেফাজত, নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র এবং স্থানের ব্যবস্থা, নিভৃত-কক্ষ বিচার কার্যক্রম, বিনা খরচে আদালতের আদেশের কপি পাওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। বিলটিতে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধে সরকার, প্রতিপালন কর্মকর্তা, সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের দায়দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট করাসহ সেবা প্রদানকারি প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে গণ্য করার বিধান রয়েছে। এইধারা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা পরিশিষ্টে দ্রষ্টব্য তবে এখানে এই আইনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় আলোচিত হয়েছে।
যাদের জন্য আইন প্রযোজ্য
১। পারিবারিক সহিংসতার শিকার ব্যক্তি যিনি নারী অথবা শিশু হবেন; পারিবারিক সহিংসতা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিবন্ধী শিশু;
২। পারিবারিক সহিংসতার শিকার ব্যক্তি যার সাথে অভিযুক্ত ব্যক্তির পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে।
৩। এদের পক্ষ হয়ে যে কেউ মামলা/অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন।
৪। অভিযুক্ত পক্ষ পূর্ণবয়স্ক পুরুষ সদস্য যার সাথে সহিংসতার শিকার ব্যক্তির পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে;
৫। সহিংসতার শিকার নারীর স্বামী অথবা স্বামীর আত্মীয় নারী ও পুরুষ উভয় আত্মীয়ই হতে পারে।
উত্তরণের উপায়
১। প্রথম শ্রেণীর ম্যজিস্ট্রেট অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে অন্তর্বর্তীকালীন সুরক্ষা আদেশ অথবা অন্য কোনো আদেশ জারি করতে পারবেন;
২। এই আইনে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট প্রয়োগকারী কর্মকর্তা ও সহকারী প্রয়োগকারী কর্মকর্তা বা সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান অভিযোগ গ্রহণের পর সহিংসতার শিকার ব্যক্তিকে চিকিৎসা সেবা, আইনগত সহায়তাসহ অন্য সেবাগুলো প্রাপ্যতা সম্পর্কে অবহিত করবেন।
আইনগত ক্ষমতা
আইনটিতে ফৌজদারি ও দেওয়ানি উভয় আইনের মিশ্রণ ঘটেছে; আবেদনের ওপর ভিত্তি করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুরক্ষা আদেশ প্রদান করতে পারবেন; অভিযুক্ত ব্যক্তি আদেশ ভঙ্গ করলে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি এবং গ্রেফতারপূর্বক জেলে প্রেরণ করতে পারবেন; ক্ষতিপূরণের ডিক্রি প্রদান করতে পারবেন;
আবেদনকারী আবেদন করার পর বিজ্ঞ আদালত আবেদনপত্রটি বিবেচনায় নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সুরক্ষা আদেশ ও নোটিশ প্রদান (সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানো) করবেন এবং পক্ষগুলোর মধ্যে শুনানির আয়োজন করে সুরক্ষা আদেশ (নোটিশ প্রদানের ৩০ দিনের মধ্যে) করবেন। মামলার বিবাদী পক্ষ রায় প্রদানের ৩০ দিনের মধ্যে চীফ জুডিশিয়াল ম্যজিস্ট্রেট বা ক্ষেত্রমত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যজিস্ট্রেট আদালতে আপিল করতে পারবেন। আদেশ অবমাননার শাস্তির বিধান বিবাদীপক্ষ সুরক্ষা আদেশ লঙ্ঘন করিলে উহা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়ে অনধিক ৬ মাস কারাদণ্ড অথবা ১০,০০০ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন। বিবাদী যদি একই অপরাধের পুনরাবৃত্তি ঘটান সেক্ষেত্রে অনধিক ১২ মাস কারাদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে ২০,০০০ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে বিধান রাখা হয়েছে প্রস্তাবিত আইনে। এখানে উল্লেখ্য, অসত্য ও ভিত্তিহীন অভিযোগকারীর বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান রাখা হয়েছে।
আরও কিছু বিষয়
ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে আদালত সহিংসতার শিকার ব্যক্তির আঘাত অথবা ক্ষতি অথবা লোকসানের প্রকৃতি বিবেচনা করে ন্যায্য ও যৌক্তিক ক্ষতিপূরণের আদেশ দেবেন। সন্তানের সুরক্ষার জন্য সুরক্ষা আদেশ অথবা দাবিকৃত অন্যান্য প্রতিকারের আবেদন শুনানির যে কোনো পর্যায়ে সহিংসতার শিকার ব্যক্তি অথবা আবেদনকারীর অনুকূলে সন্তানের হেফাজত প্রদান করতে পারবেন।
আপিল
এই আইনে সংক্ষুব্ধ কোনো পক্ষ আপিল করতে পারবেন। তবে ক্ষতিপূরণের আদেশের বিরুদ্ধে আপিলের ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ তার বিরুদ্ধে প্রদত্ত ক্ষতিপূরণের আদেশের শতকরা ৫০ ভাগ অর্থ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির অনুকূলে জমা প্রদানসাপেক্ষে আপিল করতে পারবেন।
এতদিন অন্যান্য আইনের অধীনে পারিবারিক সহিংসতার অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হতো। দীর্ঘ আন্দোলনের পর সরকার পারিবারিক নির্যাতনকে চিহ্নিত করে আলাদা আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে। এই আইন যাতে সঠিকভাবে ব্যবহার হতে পারে সেজন্য সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, এক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন হওয়া দরকার বিচার ব্যবস্থার। এই আইনের সদ্বব্যবহার করতে হবে নারীকেই। অন্যদিকে আইনের পাশাপাশি বাড়াতে হবে সমাজ সচেতনতা। পরিবর্তন আনতে হবে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতায় ও দৃষ্টিভঙ্গিতে। তাহলে ভারসাম্যহীন সমাজ ব্যবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে, সুদৃঢ় হবে সমাজে নারী অবস্থান।
পারিবারিক সহিংসতামূলক ঘটনা দীর্ঘকাল ধরে চলে এলেও একবিংশ শতাব্দীর শেষপর্যায়ে বিষয়টি বৈশ্বিকপর্যায়ে বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার সমাজবিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বিবেচনায় আসে। বাংলাদেশে যতরকম সহিংসতার ঘটনা ঘটে তার বেশিরভাগই পারিবারিক সহিংসতা এর প্রত্যক্ষ শিকার নারী এবং পরোক্ষ শিকার শিশু ও পরিবারের অন্য সদস্যরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে শহরাঞ্চলের ৫৩ শতাংশ নারী ও গ্রামাঞ্চলের ৬২ শতাংশ নারী পরিবারে তাদের স্বামী এবং শ্বশুর বাড়ির আত্মীয়-স্বজন দ্বারা শারীরিক, মানসিক এবং যৌন নির্যাতনের শিকার হন। জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী ৪৩ শতাংশ নারী পারিবারিক সহিংসতার শিকার। এর মধ্যে ১১ শতাংশ যৌতুকবিষয়ক নির্যাতন। তবে মাঠপর্যায়ের প্রকৃত অবস্থা আরো নাজুক।
পরিবারে শিশু নির্যাতনের হার ক্রমেই বেড়েই চলছে তা সে পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ যেভাবেই হোক। এটি সর্বজনবিদিত যে পারিবারিক নির্যাতনে শিশুরা মারাত্মকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয় এবং এর নেতিবাচক প্রভাবে তাদের মধ্যকার ক্ষত দীর্ঘস্থায়ী হয়। এতে একদিকে তারা মৌলিক অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত হয়, অন্যদিকে তাদের জীবনের নিরাপত্তা এবং স্বাভাবিক ও সাবলীলভাবে বেড়ে ওঠা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
শুধু নিম্নবিত্তই নয়, উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও শিক্ষিত নাগরিক সমাজের চার দেয়ালের মধ্যেও পারিবারিক সহিংসতার শিকার নিষ্পেষিত নারীর কান্না গুমরে ওঠে। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য এই যে প্রকাশ্যে কিংবা লোকচক্ষুর অন্তরালে সংঘটিত এসব নির্যাতনের ঘটনা এখনো ব্যক্তিগত বিষয় বলে বিবেচিত হয়। এমনকি আইনপ্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও বিষয়টি পারিবারিক এবং ব্যক্তিগত বিষয় হিসেবে বিবেচনায় নেয়। ফলে নির্যাতনের শিকার নারী পুলিশ স্টেশন বা আদালতে যেতে তেমন ভরসা পায় না। কেননা সেখানেও তারা বিভিন্নভাবে হয়রানি বা পুনরায় নির্যাতনের শিকার হন। এছাড়া সামাজিকভাবেও তারা বিভিন্নরকম প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হন।
বাংলাদেশ সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে সব ক্ষেত্রে নারীর সমঅধিকারের কথা বলা হয়েছে। উপরন্তু নারীর অনগ্রসরতা বিবেচনায় ২৮ (৪) অনুচ্ছেদে নারী উন্নয়নের লক্ষ্যে নতুন আইন বা নীতি প্রণয়নের কথা বলা হয়েছে। এ অনুচ্ছেদের ভিত্তিতে প্রণীত হয়েছে পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০। কেননা প্রচলিত আইনগুলোয় পারিবারিক সহিংসতা গুরুত্ব পায়নি এবং কোনোভাবেই এর প্রতিকার পাওয়া যায়নি। এছাড়া দ-বিধি বা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপরাধী বা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সরাসরি শাস্তি পেতে হয়। ফলে সমঝোতার আগেই পরিবারগুলো ভেঙে যায়; যা পরিবার এবং সমাজের জন্য হুমকি। এ পর্যায়ে এমন একটি আইনের প্রয়োজন দেখা দেয়, যে আইনের মাধ্যমে পরিবারে নারী ও শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত হয় এবং নারীর সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়। এ প্রেক্ষিতে প্রণীত হয় পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০ এবং এর বিধিমালা ২০১৩।
এই আইন বাস্তবায়নের পথে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা রয়েছে যা সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে মোকাবেলা করতে হবে। প্রতিবন্ধকতাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে
১. পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন ২০১০ একটি নতুন আইন, তাই অধিকাংশ মানুষ এ আইন সম্পর্কে অবহিত নয়;
২. আইনটি কেবল পরিবারের সদস্যদের জন্য প্রযোজ্য, তাই এটি খুবই স্পর্শকাতর;
৩. আদালত, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রয়োগকারী কর্মকর্তাসহ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের যথাযথ সমন্বয়হীনতা;
৪. প্রচলিত আইন এবং সমাজব্যবস্থায় তৈরি পুরাতন এবং প্রচলিত মানসিকতা;
৫. পুরুষতান্ত্রিক ধ্যানধারণা ও
৬. নারীর ক্ষমতায়নে বাধাগ্রস্ততা ইত্যাদি।
উপরোল্লিখিত প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য পারিবারিক পরিম-লে নারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার (যেমন: পরিবারে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা) ক্ষেত্রে কাজ করতে হবে; পারিবারিক সুরক্ষা আইন ২০১০ ও এর বিধিমালা ২০১৩ এর ওপর সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, যেন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং সাধারণ জনগণ এই আইন বাস্তবায়নে এবং পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে এবং কমিউনিটিকে নারী ও শিশু অধিকার সম্পর্কে অবহিত করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান এবং পারিবারিক নির্যাতনবিরোধী আইনগুলোর বাস্তবায়ন মনিটর করার মাধ্যমে এ আইনের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করা সম্ভব।
পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন ২০১০-এর কার্যকর প্রয়োগে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, সুশীল সমাজ ও সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর পারিবারিক সহিংসতার শিকার সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদানের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। পারিবারিক সহিংসতার শিকার নারী ও শিশুরা আইনের আশ্রয় নেয়ার ক্ষেত্রে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। এমনকি সহিংসতার ঘটনা পারিবারিক পরিম-লে সংঘটিত হওয়ায় ও আইনটি সম্পর্কে ধারণা না থাকায় অনেকেই আইনের আশ্রয় নিতে আগ্রহী হয়ে ওঠে না। তাই আইন প্রয়োগের দায়িত্বে নিয়োজিতদের জেন্ডার সংবেদনশীল হওয়া অত্যাবশ্যক। তাছাড়া পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন ২০১০-এ সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির গোপনীয়তা রক্ষার পাশাপাশি আদালত কর্তৃক আশ্রয় প্রদানের মাধ্যমে সারভাইভারের আস্থার জায়গাটি সুদৃঢ় করার ব্যবস্থা এবং দ্রুততার সঙ্গে আইনি সহায়তা প্রদান করার যে কথা বলা হয়েছে, সে সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে হবে।
এ ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, সুশীল সমাজ ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঐক্যবদ্ধভাবে এ আইনের কার্যকর প্রয়োগের লক্ষ্যে গণসচেতনতা সৃষ্টি এবং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়ার লক্ষ্যে সরকার এবং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে হবে। পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছে এমন সব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে আলোচ্য আইনটির পাশাপাশি অপরাপর আইনের মাধ্যমে প্রতিকারের উপায়গুলো জানিয়ে দিতে হবে। সর্বোপরি এ আইনের প্রয়োগ এবং বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা রাখার মাধ্যমে নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য দূরীকরণে আইনের বাস্তবায়নে আরো সহজ-সরল কোনো নীতিমালা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, সুশীল সমাজ ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। নারীর ক্ষমতায়ন ও ক্ষমতার মূল স্রোতধারায় নারীদের অংশগ্রহণ তখনই সম্ভব হবে যখন সমাজে নারী ও শিশুর ওপর সহিংসতার মাত্রা কমে যাবে এবং নারীদের অবস্থানের উন্নতি হবে। একই সঙ্গে জাতীয় জীবনে পুরুষের পাশাপাশি নারীর সমঅধিকার এবং সমান অংশগ্রহণের অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।
দেশব্যাপী হত্যা, অ্যাসিড নিক্ষেপ, ধর্ষণ, নারী পাচার ইত্যাদির মতো ঘটনা বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে। বতমান সরকার এসব দমন বা নিয়ন্ত্রণে গ্রহণ করছে নানা পদক্ষেপ কিন্তু কিছুতেই কমছে না সহিংসতামূলক ঘটনা। এখন অনেক পরিবারের সদস্যও নিজ পরিবারে নিরাপদ নয়। অর্থাৎ দেশে অরক্ষিত পরিবারের সংখ্যাও বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে। একের পর এক পারিবারিক সহিংসতার খবরে এখন অনেকেই ভীতসন্ত্রস্ত। এখন কথা হলো, নিজ পরিবারই যদি মানুষের জন্য নিরাপদ বা সুরক্ষিত স্থান না হয় তবে মানুষ যাবে কোথায়? বিভিন্ন মাধ্যমে বলা হয়ে থাকে, পরিবারের সদস্য হচ্ছে মানুষের রক্ষাকবচের অন্যতম স্থান। তবে পারিবারিক সহিংসতা বাড়ার কারণে এখন আর এমনভাবে কিছুই বলা হচ্ছে না।
মানুষের জন্য পরিবার এমনই একটি জায়গা বা স্থান যার সদস্যরা একে অপরকে রক্ষা করে বিভিন্ন সমস্যা বা নিরাপত্তাহীনতা থেকে। সন্তানদের জন্য অন্যতম ভরসা হচ্ছে বাবা-মা। বিয়ের পর মেয়েদের জন্য অন্যতম নিরাপদ স্থান হয় স্বামীর ঘর। আর স্বামী-স্ত্রীর রক্ষাকবচ। কিন্তু বিভিন্ন কারণে পারিবারিক সহিংসতা বাড়ায় পরিবারের অনেকেই অনেক ব্যাপারেই এখন কেন নিরূপায়। এর মূল কারণ হলো পরিবারের সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস, শ্রদ্ধা, ভালবাসা ইত্যাদি কমে আসছে। স্ত্রী সন্দেহ করছে স্বামীকে, স্বামী সন্দেহ করছে স্ত্রীকে, মা-বাবা সন্দেহ করছে ছেলেমেয়েকে। সন্দেহের প্রথম পর্যায়ে এর পরিণতি সম্বন্ধে তেমন কিছুই বুঝা যায় না। কিন্তু দিনের পর দিন তা গড়ায় চরম পরিণতির দিকে। অর্থাৎ এসব ক্রমেই সহিংসতায় রূপ নেয়। কিছুদিন আগে পারিবারিক দ্বনেদ্ব ঢাকার জুরাইনে দুই সন্তান পায়েল ও পাবনকে সাথে নিয়ে আত্মহত্যা করেছেন গৃহবধূ ফারজানা রীতা। এ নিয়ে অনেকদিন লেখালেখি হয়েছে পত্র-পত্রিকায়। দেশের সকল স্তরের মানুষ ঘটে যাওয়া এমন একটি পারিবারিক সহিংসতাকে ধিক্কার না জানিয়ে পারলো না। কয়েক দিন যেতে না যেতেই দুই সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহুতি দিয়েছেন কমলাপুরে বিলাসী নামে এক গৃহবধূ। এ ধরনের ঘটনা হয়তো দেশের বিভিন্ন স্থানে আরো ঘটছে, কিন্তু সব খবর তো আর মিডিয়া বা আইনের লোকের কাছে পৌঁছে না। না হলে হয়তো প্রতিদিনই এ ধরনের পারিবারিক সহিংসতার খবর পত্র-পত্রিকায় ছাপা হতো।
হত্যা, অ্যাসিড নিক্ষেপ, ধর্ষণ, নারী পাচার ইত্যাদির মতো অপরাধে শাস্তির বিধান দেশের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০৩-এ থাকলেও পারিবারিক সহিংসতা ও পারিবারিক নির্যাতনের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট শাস্তির ধারা বা সুনির্দিষ্ট অপরাধের ধারা উক্ত দন্ডবিধিতে তেমনভাবে উল্লেখ নেই। যে কারণে অনেকে পারিবারিক সহিংসতা ঘটিয়ে সহজেই পার পেয়ে যাচ্ছে। এদের খুব একটা শাস্তির নজির দেখা যাচ্ছে না বলে ক্রমে বাড়ছে পারিবারিক সহিংসতা। যা ক্রমে বাড়াচ্ছে সামাজিক সমস্যা। এর চরম নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে আইন-শৃক্মখলা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে।
বর্তমান সরকার এসব সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে বা রোধে প্রণয়ন করতে যাচ্ছে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ আইন। ইতোমধ্যে পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) বিল, ২০১০ নামে আইনটির বিল উপস্থাপন করা হয়েছে জাতীয় সংসদে। বিলটি আগামী অধিবেশনে পাস হবে বলে জানা গেছে। বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিকালে দেশে নারী নির্যাতনের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। তাতে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু ও আহত হওয়ার খবর দেশের মানুষ জানতে পেরেছে। সে কারণে সরকারের নীতিনির্ধারকদের অনেকেই তা দ্রুত পাস করার পক্ষে মত দেন। বিলটিতে যাতে কোনো ফাঁক-ফোকর না থাকে সেদিকেও লক্ষ্য রাখার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, কাউকে শাস্তি প্রদান করা বা আটক রাখার চিন্তা থেকে করা হচ্ছে না আইনটি। তবে এ সংক্রান্ত মিথ্যা মামলা কেউ দায়ের করলে তার বিরুদ্ধে গ্রহণ করা হবে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা।
অনেকের অভিমত হচ্ছে, পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধে উক্ত আইন পাস হলেও তা প্রকৃতপক্ষে তেমন কাজে আসবে না। কারণ প্রকৃত অপরাধীকে শাস্তি প্রদান করা বা আটক করাই এর প্রধান উদ্দেশ্য নয়। এতে করে হয়তো অনেক ধরনের ফাঁক-ফোকর থেকেই যাবে। পার পেয়ে যাবে প্রকৃত অপরাধীরা।
তথ্য সংগ্রহ:
তথ্য আপা প্রকল্প
সংগ্রহ: ইন্টারনেট।
29 November 2018
বাংলাদেশে আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়া/ Law Making Process in Bangladesh
বাংলাদেশে কিভাবে আইন প্রণয়ন (Law Making Process in Bangladesh) করা হয় তা জানতে পারবেন এই ভিডিও দেখার মাধ্যমে। ভিডিও দেখাত পর আশাকরি বাংলাদেশে আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়া সকলে বুঝেছেন। সব সময় মূল আইন পড়ুন এবং গাইড বা নোট বইকে সহায়ক বই হিসাবে ব্যবহার করুণ।
28 November 2018
“দেনমোহর, ভরণপোষণ ও সন্তানের কাস্টডি”
ফাহরিয়া ফেরদৌস: মেয়ে নিজে যদি তালাক দেন তবে দেনমোহর পাবেন কিনা? যদি সন্তান থেকে থাকে, আর মেয়েটি তালাকের পর দেনমোহর বা ভরণপোষণ দাবি করেন তবে সেক্ষেত্রে “মা” তাঁর বাচ্চার কাস্টডি হারাবেন কিনা বা বাবা বাচ্চা নিয়ে যাবে কিনা?
অধিকাংশ মেয়েরই ধারণা থাকে যে, সে যদি দেনমোহর বা ভরণপোষণ দাবি করেন তবে এতে প্রমাণিত হয় যে, তিনি সন্তান পালনে অক্ষম এবং কোর্ট তার এই চাওয়াটিকে অযোগ্যতা ভেবে বাচ্চা বাবাকে দিয়ে দিবে। মানুষ বিয়েটি খুব সহজভাবে করতে পারলেও এর সাথে সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে কোন ধারণাই রাখেন না, বা ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করে থাকেন। বিয়ে বিচ্ছেদের পর এ দুইটি প্রশ্ন খুব কমন যা মেয়ে বা মেয়ে পক্ষ থেকে পাওয়া যায়। খুব অবাক করা একটি বিষয় আমি দেখেছি এই প্রশ্নটি বেশি আসে মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্ত শ্রেণীর মেয়েদের থেকে!! অধিকাংশ সময়ই মেয়েটি শিক্ষিত অর্থাৎ লেখাপড়া জানা হয়, এমনকি তারা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও হয়ে থাকেন!
তালাকের পর একজন মেয়ের দেনমোহরের সাথে বাচ্চার কাস্টডির কোন সম্পর্ক নেই। দেনমোহর ও ভরণপোষণ চাওয়া কোনভাবেই বাচ্চার কাস্টডির অধিকার লঙ্ঘিত করে না। এটি প্রমাণ করে না যে আপনি সন্তান পালনে অক্ষম।
আইনগত ভাবে, বাচ্চাটি যদি ছেলে হয় তাহলে সাত বছর পর্যন্ত এবং মেয়ে বাচ্চা হলে সাবালিকা হওয়া পর্যন্ত মায়ের কাছে থাকবে। তবে অনেক সময় পারিপার্শ্বিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে এর পরিবর্তন হতে পারে।
দেনমোহর একজন মেয়ের অধিকার। এই দেনমোহর পাবার অধিকার একজন মেয়ে কোনভাবেই হারান না, যদি না তিনি নিজে এটি নেয়াতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন। কোন মেয়ে নিজে তালাক দিক বা অপরপক্ষ থেকে তালাক দেয়া হোক, মেয়েটি তালাকের নোটিশ পাবার পরই দেনমোহর দাবি করতে পারেন। এতে কোন বাধা নেই। আবার তালাকটি কার্যকর হবার পরও দেনমোহর দাবি করতে পারেন। তবে অবশ্যই সেটি তিন বছরের মাঝে হতে হবে।
মৌখিকভাবে কোন মেয়ে নিজেই বা ভাইবোন, আত্মীয়, বন্ধু দ্বারা দেনমোহর দাবি করতে পারেন। যদি অপরপক্ষ দেনমোহর দিতে রাজি থাকে তবে এই বিষয়টি কোর্টে না এসেও সমাধান করা যায়। উভয় পক্ষের সম্মতিতে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে ও স্বাক্ষর নিয়ে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে সমস্ত শর্তাবলী লিখে একটি লিখিত চুক্তি তৈরির মাধ্যমে সমস্যাটি সমাধান করা যেতে পারে।
আর যদি এরকম ভাবে সমস্যা সমাধান না হয় তবে কোর্টে যেয়েও দেনমোহর দাবি করতে পারেন। কোর্ট চাইলে একবারে অথবা কিস্তিতে দেনমোহর ও ভরণপোষণ পরিশোধ করার আদেশ দিতে পারেন। মেয়ে তালাকের নোটিশ পাবার পর থেকে তিন মাস এবং তালাক কার্যকরি হবার পর ইদ্দতকালীন তিন মাসের ভরণপোষণ অবশ্যই পাবেন; আর মেয়েটি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকে, তবে সন্তান প্রসব হওয়া পর্যন্ত মেয়েটি ভরণপোষণ পাবেন।
তার যদি কোন পূর্ববর্তী ভরণপোষণ বাদ যেয়ে থাকে, চাইলে সেটিও একই সাথে দাবি করতে পারেন। তবে অধিকাংশ সময়ই এটি প্রমাণ করা কঠিন হয়ে পড়ে যে, বিয়ে বলবৎ থাকা অবস্থায় মেয়েটিকে তার স্বামী ভরণপোষণ দেননি। দেনমোহর ও ভরণপোষণের মামলা অবশ্যই বিয়ের কাবিননামা, তালাকের নোটিশ অথবা তালাক কার্যকর হয়ে গেলে তালাকের সার্টিফিকেট এবং দুইজন সাক্ষী সমেত মামলাটি দায়ের করতে হয়।
যে কাজীর কাছে বিয়ে পড়ানো হয়, সেই কাজী অফিস থেকে বিয়ের কাবিননামা যতবার খুশি ততবার তোলা যায়। আবার যে তালাকের নোটিশ পাঠানো হয়, সেখানে সংশ্লিষ্ট কাজী অফিসের ঠিকানা দেয়া থাকে, সেখান থেকে প্রয়োজনমতো তালাকের সার্টিফিকেট তোলা যায়।
ফাহরিয়া ফেরদৌস
আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট
02 April 2017
নারী ও শিশু নির্যাতন মামলায় জামিন সমস্যা
বেলাল আজাদ॥
ঘটনাচিত্র-১: ইয়াসমিন আর ইমরান একে অপরকে ভালবেসে বিয়ে করে। ৩ বছরের দাম্পত্যে তাদের একটি পূত্র শিশুর জন্ম হয়। এর মধ্যে দু'জনের সংসারে দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হলে, ইয়াছমিন পিত্রালয়ে চলে যায়। ইয়াছমিন তার স্বামীর বিরুদ্ধে স্থানীয়ভাবে সালিশ দিলে, সালিশকারের কাছে ইমরান হাজির হয়নি। ইয়াছমিন নিকটস্থ থানায় অভিযোগ দিলে, থানার পুলিশ ইয়াছমিনকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়। ইয়াছমিন আদালত এলাকায় গিয়ে একজন আইনজীবীর সাথে আলাপ করে, আইনজীবীর পরামর্শে ইয়াছমিন স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে কয়েক শ' টাকা খরচ করে সিম্পল একটি জখমী সনদ ও কাজী অফিস থেকে কাবিননামার কপি সংগ্রহ করে আবার আইনজীবীর সাথে সাক্ষাৎ করে। ইয়াছমিন বাদী হয়ে স্বামী, বৃদ্ধ শ্বাশুর ও শ্বাশুরী ৩ জন কে আসামী করে 'নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যূনাল'এ এক লক্ষ টাকা যৌতুক দাবীর অভিযোগে নারী ও শিশ নির্যাতন দমন আইন'২০০০(সংশোধিত'২০০৩) এর ১১(গ)/৩০ ধারায় 'ফৌজদারী দরখাস্ত' (মামলা) দায়ের করলে, বিজ্ঞ বিচারক (নারী জজ) মামলাটি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্ট 'থানার অফিসার ইনচার্জ কে মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে নিয়মিত মামলা হিসেবে রুজু করার নির্দেশ' দেন। থানার ওসি যথারীতি মামলাটি GR মামলা হিসেবে রুজু করে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করে। মামলাটিতে চার্জসীট দাখিলের আগ্ পর্যন্ত স্বামী ইমরান ও তার বৃদ্ধ মা-বাবা ঐ মামলায় (আমলযোগ্য/জি.আর মামলা রুজু হওয়ার থেকেই ) ওয়ারেন্ট হয়ে আত্মগোপনে থেকে বাদী ইয়াছমিনের সাথে আপোষের চেষ্টা করতে থাকে। আপোষের কথাবার্তাও চূড়ান্ত হয়। এর মধ্যে ঐ মামলায় আসামী ইমরান পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলে, স্ত্রী অর্থাৎ বাদী ছুটে যায় থানায়- থানার ওসি/দারোগা'কে আপোষের কথা বলে, ইমরান কে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করলেও, ওয়ারেন্ট আসামী ছেড়ে দেয়ার সুযোগ না থাকায়, ইমরানকে ইয়াছমিনের দায়েরকৃত মামলা যে আদালতে চলমান, সেই সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। ইমরানের আইনজীবী জামিনের আবেদন করলে, বাদী ইয়াছমিন আইনজীবী আদালতে দাড়িঁয়ে 'আসামীর (স্বামী) সাথে আপোষ হয়ে সুখে দাম্পত্য কাটানোর কথা বলে আসামীর জামিনে অনাপত্তির আবেদন জানায়। উভয়পক্ষের শুনানীক্রমে (ট্রাইব্যূনালে বিচার্জ মামলায় ম্যাজিষ্ট্রেটের জামিন দেয়ার এখতিয়ার না থাকায়) আসামীর জামিন নামঞ্জুর করে, ইমরান কে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এরপরে ম্যাজিষ্ট্রেটের জামিন নামঞ্জুরের আদেশের সহিমুহুরী নকল কপি নিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যূনালে 'বিপি মিচ' মামলা মূলে জামিনের আবেদন করে নিম্ন আদালতের নথি তলব , জামিন শুনানী শেষে দীর্ঘ দেড় মাস পরে আসামী ইমরান কারামুক্তি পায়!,,,,
ঘটনাচিত্র-২:জুলেখা ও আনোয়ার ভালোবেসে দুই পরিবারের অমতে বিয়ে করেন ২০১০ সালে। সময়ের পরিক্রমায় উভয় পরিবারই বিয়ে মেনে নেয়। সামাজিকভাবে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁদের নতুন সংসার শুরু হয়। দুজনই উচ্চশিক্ষিত। আনোয়ার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে উচ্চবেতনে (মাসিক ৮০ হাজার টাকা) চাকরি করেন। সাংসারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জুলেখার সঙ্গে তাঁর ননদ, শ্বশুর, শাশুড়ি, ভাশুর ও ভাবির মতানৈক্য হয়। এক বছরের মাথায় বিয়ে ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়। জুলেখা তাঁর ব্যবহার্য কাপড়চোপড়, অলংকার প্রভৃতি নিয়ে পিত্রালয়ে গমন করেন। আনোয়ার অনেক চেষ্টা করেও জুলেখাকে ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হন। জুলেখা মামলা করার সিদ্ধান্ত নেন। স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছ থেকে আঘাতসংক্রান্ত সনদ নিয়ে স্বামী, অশীতিপর বৃদ্ধ শ্বশুর, শাশুড়ি, ননদ, ভাশুরও ভাবিকে আসামি করে এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি এবং মারধরের অভিযোগে স্থানীয় থানায় প্রভাব খাটিয়ে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০’-এর ১১(গ) ধারায় মিথ্যা অভিযোগ করেন। পুলিশ গভীর রাতে তাঁদের সবাইকে আটক করে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠায়। জামিনের আবেদন করা হলে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মামলাটি বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক বিচার্য এবং জামিনের আবেদন বিবেচনা করার এখতিয়ার নেই, এ কারণে আবেদন নামঞ্জুর করে সবাইকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ঘটনাচিত্র-৩: হাসিনা কলেজপড়ুয়া ছাত্রী। কলেজে প্রায়ই একটি ছাত্রসংগঠনের সভাপতি রিয়াজুল ও তাঁর সহযোগীরা হাসিনা কে উত্ত্যক্ত করতেন। অতিষ্ঠ হয়ে হাসিনা কলেজের অধ্যক্ষ ও অভিভাবকদের বিষয়টি জানান। হাসিনার পরিবার থানায় জিডি করে। অধ্যক্ষ ও অভিভাবকেরা রিয়াজুলকে মৌখিকভাবে সতর্ক করেন। এতে ক্ষিপ্ত রিয়াজুল কলেজ শেষে ফেরার পথে এক দিন বর্ষাকে অপহরণ করেন এবং সহযোগীরাসহ হাসিনা কে ধর্ষণ করেন। উপর্যুপরি ধর্ষণের কারণে ঘটনাস্থলেই হাসিনা মারা যান। স্থানীয় এক খাল থেকে পরদিন ভোরে বিবস্ত্র হাসিনার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। শোকে স্তব্ধ হাসিনার বাবা থানায় মামলা করেন। পুলিশ রিয়াজুল ও তাঁর সহযোগীদের আটক করে এবং বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট সব অভিযুক্ত ব্যক্তির জামিনের আবেদন নাকচ করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ওপরের ৩ টি ঘটনা কল্পিত কোনো বিষয় নয়।
প্রতিদিন পত্রিকার পাতা উল্টালে এর চেয়েও নৃশংস, করুণ ঘটনা আমাদের চোখে পড়ে।
৩য় ঘটনায় জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করা ন্যায়বিচারের জন্যই প্রয়োজনীয়। কারণ, সংঘটিত অপরাধটি নৃশংস এবং ঘৃণ্য প্রকৃতির। বিচারকার্য সম্পন্ন হওয়ার পুরো সময়ই তাঁদের জেলহাজতে রাখা উচিত। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় জামিন পেলে তাঁরা অবশ্যই মামলার গতি-প্রকৃতি ভিন্ন পথে প্রবাহিত করতে বা সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে উপযুক্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপনে বাধা দিতে পারেন।
কিন্তু ১ম ও ২য় মামলা দু'টিতে সবাইকে জেলহাজতে প্রেরণ নিঃসন্দেহে অবিচার। শুধু ভুল বুঝাবুঝি থেকে ১ম মামলাটি ও হয়রানি করার ২য় মামলাটি করা হয়েছে, তা মামলার ঘটনা এবং ঘটনা ও সংযুক্ত কাগজপত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়। ২য় মামলায় যে ব্যক্তি মাসে ৮০ হাজার টাকা বেতন পান, তিনি কখনোই শুধু এক লাখ টাকা যৌতুক দাবি করবেন না। উপরন্তু, সরকারি হাসপাতাল কর্তৃক প্রদানকৃত কোনো সনদ নেই। কিন্তু সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের আইনানুযায়ী এ ক্ষেত্রে কোনো কিছু করার নেই। কারণ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ম্যাজিস্ট্রেটকে জামিন প্রদানের কোনো ক্ষমতাদেওয়া হয়নি। করা হয়েছে বিজ্ঞ ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল’কে। অথচ থানায় দায়ের হওয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে প্রতিটি মামলা পুলিশ রিপোর্ট (অভিযোগপত্র বা চূড়ান্ত প্রতিবেদন) দাখিল করার আগপর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে থাকে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এর জামিনের বিধানসংক্রান্ত ১৯(২) ধারাটি নিম্নরূপ:
‘উপধারা (৩)-এর বিধান সাপেক্ষে, এ আইনের অধীন শাস্তিযোগ্য অপরাধ সংঘটনে জড়িত মূল এবং প্রত্যক্ষভাবে অভিযুক্ত কোনো ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হইবে না, যদি—
ক. তাঁহাকে মুক্তি দেওয়ার আবেদনের ওপর অভিযোগকারী পক্ষকে শুনানির সুযোগ দেওয়া না হয়; এবং
খ. তাঁহার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হওয়ার যুক্তিসংগত কারণ রহিয়াছে মর্মে আদালত সন্তুষ্ট হন;
অথবা
(৩) উপধারা (২)-এ উল্লিখিত কোনো ব্যক্তি নারী বা শিশু হইলে কিংবা শারীরিকভাবে অসুস্থ হইলে, সে ক্ষেত্রে ওই ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার কারণে ন্যায়বিচার বিঘ্নিত হইবে না মর্মে ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট হইলে তাঁহাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া যাইবে।
(৪) উপধারা (২)-এ উল্লিখিত ব্যক্তি ব্যতীত এ আইনের অধীন অপরাধ সংঘটনের জন্য অভিযুক্ত অন্য কোনো ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তি দেওয়া ন্যায়সংগত হইবে মর্মে ট্রাইব্যুনাল সন্তুষ্ট হইলে তৎমর্মে কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ট্রাইব্যুনাল জামিনে মুক্তি দিতে পারিবে।’
এই ধারা থেকে সুস্পষ্ট, আইনপ্রণেতারা আইনটি কঠোরভাবে প্রয়োগ করে ক্রমবর্ধমান নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনাকে হ্রাস করার লক্ষ্যেই ‘জামিন’ এবং ‘অপরাধ আমলে নেওয়ার’ বা ‘তদন্তের নির্দেশ’ দেওয়ার ক্ষমতাকে ‘ট্রাইব্যুনাল’-এর কাছে অর্পণ করেছেন। কিন্তু আইনপ্রণেতাদের এই সদিচ্ছার অনেকটাই চাপা পড়েছে অসৎ এবং ধুরন্ধর ব্যক্তি কর্তৃক ক্রমাগত আইনটির অপব্যবহারের জন্য। আইনটি যতখানি ভালো, ঠিক ততখানিই কঠোর। এই আইনে মিথ্যা মামলা করার জন্য সাজার বিধান রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এই আইনে মিথ্যা মামলা বা অভিযোগ করার জন্য কোনো অভিযোগকারী বা এজাহারকারীর সাজা হয়েছে, এমন উদাহরণ অপ্রতুল। আইনটি অনেকটা হয়ে পড়েছে আতঙ্কের। এখন কেউ কাউকে হুমকি দিতে হলেও বলে, ‘নারী-শিশু মামলা দিয়ে তোমাকে জেলের ভাত খাওয়াব।’ প্রথম ঘটনায় মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হলে অবশ্যই অভিযোগকারীকে সাজাদেওয়া উচিত। কিন্তু অভিযোগকারী মহিলা হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল অভিযোগকারীকে মিথ্যা মামলা দায়েরের জন্য স্বাভাবিকভাবেই সাজা দেবেন না। কিন্তু মিথ্যা মামলায় একটি পরিবারের সদস্যরা যে জেলহাজতে ঘুরে এলেন, অবর্ণনীয় মানসিক এবং শারীরিক যন্ত্রণার শিকার হলেন, সামাজিকভাবে হেয় হলেন; সর্বোপরি, মিথ্যা মামলাকারী অভিযোগকারীর অভিপ্রায় পূরণ হলো আদালত এবং আইনের জাঁতাকলের মাধ্যমে, তার ক্ষতিপূরণ কে দেবে? কখনো কি এর আর্থিক মূল্য নির্ধারণ করা সম্ভব? বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণকালেও ম্যাজিস্ট্রেটদের বলা হয়েছে, এ আইনের অধীনে জামিন প্রদান না করতে। জামিনের আবেদন যদি ‘নামঞ্জুর’ করা যায়, তবে ম্যাজিস্ট্রেট কেন প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ‘মঞ্জুর’ করতে পারবেন না বা তাহলে প্রাথমিকভাবে নিরপরাধ বলে প্রতীয়মান হওয়া কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তির জেলহাজতে যাওয়াই অমোঘ নিয়তি কি না, সে প্রশ্নের কোনো সদুত্তর মেলেনি। আদালতে আইন অনুযায়ীই ক্ষমতাহীন হয়ে থাকা সম্ভবত সবচেয়ে বড় অসহায়ত্ব। নির্মম পরিহাস হলো, এ ক্ষেত্রে বিজ্ঞ কৌঁসুলি, আসামি, প্রসিকিউশন—সবাই জানেন, আবেদন নামঞ্জুর হবে। তবু অহেতুক শুনানি নামের পরিহাস ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মঞ্চস্থ হয়ে থাকে।
একজন ব্যক্তি যখন আদালতে অভিযুক্ত হয়ে আসেন, প্রথম আশঙ্কাটির উদ্ভব হয় ‘জামিন’ নিয়ে। কারণ বিষয়টি সামাজিক, আর্থিক, মানসিক, শারীরিক, সর্বোপরি ব্যক্তিস্বাধীনতার সঙ্গে জড়িত। এ জন্যই জামিনের বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। স্পষ্টত, জামিনসংক্রান্ত এই বিধান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এর একটি অন্তর্নিহিত দুর্বলতা।
ঢাকা ভিন্ন বাংলাদেশের প্রায় সব জেলায় ‘ম্যাজিস্ট্রেট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এর অধীনে জামিন প্রদান করবেন না’—এ নীতি অনুসরণ করা হয়। অনেক সময় ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারকেরা এ আইনে ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক জামিন প্রদানকে তাঁদের এখতিয়ারে হস্তক্ষেপ করা হয়েছে বলে মনে করেন। অনেক সময় ম্যাজিস্ট্রেটদের মৌখিকভাবে সরাসরি নিষেধও করা হয়। এমনকি এ আইনের অধীনে জামিন দেওয়ার কারণে ম্যাজিস্ট্রেটকে কারণও দর্শাতে বলা হয় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে, সশরীরে বিজ্ঞ ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে। বিষয়টি একজন ম্যাজিস্ট্রেটের জন্য নিঃসন্দেহে হতাশাজনক, বিব্রতকর এবং অপমানজনক। প্রতিটি আদালত আইন অনুযায়ী সৃষ্ট এবং আইন প্রয়োগ করে থাকেন। শুধু আইন অনুযায়ী, তথ্য-উপাত্ত এবং উচ্চ আদালত কর্তৃক ঘোষিত জামিনসংক্রান্ত নীতিমালা অনুসরণ করেই ম্যাজিস্ট্রেট জামিন আবেদনের নিষ্পত্তি করে থাকেন। ফজলুর রহমান বনাম রাষ্ট্র মামলার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে একজন ম্যাজিস্ট্রেট নিঃসন্দেহে এ আইনে ভিকটিম, এজাহারকারী ও প্রসিকিউশনকে শুনানির যুুক্তিসংগত সময় দিয়ে এবং শুনানি করে যদি অভিযুক্ত অভিযোগে দণ্ডিত হওয়ার পর্যাপ্ত উপাদান নেই বলে মনে করেন, তবে অবশ্যই জামিন দিতে পারেন।
কঠোর আইন অনেক সময়ই কঠোরতার জন্ম দিয়ে থাকে। মানুষের মঙ্গলের এবং নিষ্কলুষ সমাজের সুরক্ষার জন্যই আইন করা হয়ে থাকে। আইন-আদালতের জাঁতাকলে যেন অপরাধীই পিষ্ট হয়, যেন কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি হয়রানির শিকার না হয়। একটি ভালো আইন সমাজ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখতে পারে। আমরা সেই ভালোরই প্রত্যাশা করি।
Source: বাংলাদেশের আইন কানুন
যৌতুক মামলায় কেমন সাজা হতে পারে?
২০০৫ সালের অক্টোবরে আমি বিয়ে করি। বিয়ের আড়াই বছর পর নিরাপত্তারক্ষীর চাকরি করতে ঢাকায় আসি। দু-এক মাস অন্তর ছুটিতে বাড়ি যেতাম। কিন্তু চাকরির ছয় মাস পর আমার স্ত্রী আমাদের বাড়ি থেকে একদিন রাতে উধাও হয়ে যায়। ওই রাতে আমার বাড়ির সদস্য ও প্রতিবেশীরা অনেক খোঁজাখুঁজির পর রাত সাড়ে ১২টায় পাশের বাড়ির এক ছেলের ঘরে ওকে খুঁজে পায়। এর পরদিন সকালেই আমার স্ত্রীকে তার বড় ভাই বাড়ি নিয়ে যায়। এদিকে আমি খবর পেয়ে ঢাকা থেকে বাড়ি চলে যাই। এসে জানলাম, ঘটনাটি সত্য। ঘটনার পাঁচ দিন পর ওই ছেলে অন্য একটি মেয়েকে বিয়ে করে। পরের ছয় মাস স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করিনি। ২০০৯ সালের ২১ মে কাজি অফিস থেকে তালাকের নোটিশ স্ত্রীর কাছে ডাকযোগে পাঠিয়ে দিই। স্ত্রী আমার বিরুদ্ধে ওই বছরের ২০ জুলাই যৌতুক নিরোধক আইনের ৪ ধারা ও দেনমোহর খোরপোশের দুটি মামলা করে। মামলার সাত দিন আগে আমার স্ত্রীকে আনতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সে আসতে চায়নি। ২০ জুলাই হাজিরা দিলে আদালত আমাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন। এখন মামলা দুটি বিচারাধীন। আমি আর স্ত্রীকে কখনো গ্রহণ করব না। তাই ২০১০ সালের ৩ মার্চ তিন তালাক রেজিস্ট্রি করে কপি নিজের কাছে রাখি। আমি একটি টাকাও যৌতুক নিইনি। যৌতুক মামলায় যদি আমার পরাজয় হয়, তাহলে কেমন সাজা হতে পারে? ৪০ হাজার এক টাকা দেনমোহরে আমার বিয়ের কাবিন হয়। এই কাবিনের পুরো টাকা কী দিতে হবে? খোরপোশ কী পরিমাণ দিতে হবে? আমি অন্য কোনো মেয়েকে বিয়ে করতে পারব কি?
মো. রফিকুল ইসলাম, সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম।
আইনজীবীর পরামর্শ : আপনার চিঠির প্রথম প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, যৌতুক নিরোধ আইন, ১৯৮০-এর ধারা ৪-এ সর্বোচ্চ শাস্তি পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা জরিমানা অথবা কারাদণ্ড ও জরিমানা উভয়ই হতে পারে। এ আইনের আওতায় ন্যূনতম শাস্তি এক বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাব হলো, আপনাকে কাবিননামার পুরো ৪০ হাজার টাকা আপনার স্ত্রীকে পরিশোধ করতে হবে। যদি না আগে আপনি দেনমোহরের অংশবিশেষ পরিশোধ করে থাকেন। মুসলিম আইন অনুযায়ী বৈবাহিক সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর পরবর্তী তিন মাস পর্যন্ত খরপোশ প্রদানযোগ্য। ওই খরপোশের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় স্বামী ও স্ত্রীর সামাজিক অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে।
আপনি চিঠিতে তালাকের নোটিশের কথা উলে¬খ করেছেন, কিন্তু মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১-এর বিধান অনুযায়ী তালাকের নোটিশ সংশি¬ষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা সিটি করপোরেশনের মেয়রকে পাঠাতে হবে। ওই নোটিশ পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান অথবা মেয়র দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা চালাবেন। সমঝোতায় ব্যর্থ হলে সেই ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হবে। তালাক কার্যকর হওয়ার পর আপনার দ্বিতীয় বিয়েতে আর কোনো বাধা নেই। চিঠির বক্তব্য অনুযায়ী আপনার তালাক এখনো কার্যকর হয়নি। এ অবস্থায় আরবিট্রেশন কাউন্সিলের অনুমতি ছাড়া যদি আপনি বিয়ে করেন, তবে আপনার স্ত্রী আপনার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন এবং সে ক্ষেত্রে এক বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
পরামর্শ দিয়েছেন
অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল কবীর, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট
01 December 2016
কীভাবে পাবেন বিনামূল্যে আইনি সহায়তা?
আইনের দৃষ্টিতে দেশের সব নাগরিকই সমান। প্রত্যেকেই ন্যায় বিচার পাওয়ার অধিকারী। বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭ নং অনুচ্ছেদে প্রত্যেক নাগরিককে এ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের দরিদ্র বিচারপ্রার্থীরা অনেক সময় টাকা-পয়সার অভাবে মামলা পরিচালনা করতে পারে না। এতে তারা নিজেদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়। বাংলাদেশ সরকার ২০০০ সালে কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির সহযোগিতায় দরিদ্র বিচারপ্রার্থীদের ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন ২০০০’ পাস করে। সারা দেশের বেশিরভাগ মানুষের এ বিষয়ে এখনো পুরোপুরি ধারণা না থাকায় তারা বিনামূল্যে আইনি সহায়তা নিতে পারছেন না। নিচে এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো।
Subscribe to:
Posts
(
Atom
)